৭১ এর ১১ ডিসেম্বর: সেদিন সত্যিই সূর্য হেসেছিল
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফাইল ফটো
একাত্তরের ১১ ডিসেম্বর। বাংলার মেঘাচ্ছন্ন আকাশে আস্তে আস্তে উঁকি দিচ্ছিল বিজয়ের সূর্য। সেদিন সত্যিই সূর্য হেসেছিল। হিলি সীমান্তে যৌথবাহিনী প্রচণ্ড প্রতিরোধের মুখোমুখি পড়ে। মার্কিন সপ্তম নৌবিহারের টাস্কফোর্স বঙ্গোপসাগর অভিমুখে। মিত্রবাহিনী এগিয়ে চলছে। মৌলভীবাজারের পতন আর নরসিংদীতে যৌথবাহিনীর দখল প্রতিষ্ঠা হয়। এদিকে দেশের অধিকাংশ থানায় স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয়।
সন্ধ্যায় গোবিন্দগঞ্জে হানাদার বাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটিতে আক্রমণ ও সারারাত যুদ্ধ শেষে ভোরে গোবিন্দগঞ্জের পতন ঘটে। জাতিসংঘের অনুরোধে বিদেশি নাগরিকদের স্থানান্তরের জন্য ঢাকা বিমানবন্দরে সাময়িক সময়ের জন্য বিমান হামলা স্থগিত হয়। যুদ্ধ বিরতির জন্য প্রাদেশিক সরকারের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী জাতিসংঘ সদর দফতরে জরুরি বার্তা প্রেরণ করেন।
জামালপুর ময়মনসিংহ, গাইবান্ধা, চণ্ডীপুর, টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া, ফুলছড়িহাট ও বাহাদুরবাদ ঘাটসহ মুক্ত হয় অবরুদ্ধ বাংলাদেশের ১২টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকামুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর ৬ দিনব্যাপী অবরোধ ও প্রচণ্ড যুদ্ধের পর এদিন ভোরে হানাদারমুক্ত হয়। জামালপুর গ্যারিসনে অবস্থানকারী পাকিস্তানি বাহিনী ২১ বেলুচ রেজিমেন্টের ৬ জন অফিসার ও ৫২২ জন সেনা যৌথবাহিনীর আছে আত্মসমর্পণ করে। হানাদেরদের মধ্যে নিহত হয় ২১২ জন আর আহত হয় ২০০ জন।
এদিন মুক্তিবাহিনীর বীর ক্র্যাক প্লাটুন সকাল ১০টায় তোপখানা রোডের মার্কিন তথ্যকেন্দ্র অভ্যন্তরে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটায়। গেরিলারা সারা ঢাকার প্রত্যেক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানি বাহিনী হেলিকপ্টারে করে কমান্ডো নামানোর চেষ্টা করেও সফল হয়নি। ঢাকার চার পাশে মিত্রবাহিনী নির্দিষ্ট এলাকায় রাতে ছত্রীসেনা অবতরণ করায়।
অন্যদিকে ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লে. জেনারেল নিয়াজির কাছে এক বার্তায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জানান, মার্কিন সপ্তম নৌবহর বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। চীনও যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে পূর্ব পাকিস্তান গভর্নর ড. মালেকের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি ১৯৭১ সালের আজকের দিনে জাতিসংঘের কাছে এক বার্তা পাঠান। পূর্ব পাকিস্তান থেকে সামরিক ও বেসামরিক পাকিস্তানিদের পশ্চিম পাকিস্তানে সরিয়ে নেয়ার জন্য জাতিসংঘের সাহায্য চান তিনি। কিন্তু জাতিসঙ্ঘে পাকিস্তানের স্থায়ী দূত আগাশাহী সে বার্তা প্রত্যাখ্যান করার অনুরোধ জানান জাতিসঙ্ঘ বরাবর। এভাবে পূর্ব পাকিস্তানে অবরুদ্ধ পাকিস্তানি সৈন্যরা যখন পরাজয় মেনে নিয়ে আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পশ্চিম পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকার তখনো যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার শেষ চেষ্টা করে যাচ্ছিল।
এদিন মুক্ত যশোরের জনসভায় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ২৫ মার্চের আগের মালিককে সম্পত্তি ফেরত দান, সব নাগরিকের সমঅধিকার এবং চারটি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধকরণ। যশোর সার্কিট হাউসে তাড়া বলেন, তারা তাড়াতাড়ি সংবিধান রচনা করবেন যা ২৪ বছরে পাকিস্তান করতে পারেনি।
ঢাকায় বেলা ৩টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সান্ধ্য আইন জারি করা হয়। ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর সহায়তায় ঢাকা থেকে ব্রিটিশ ও অন্য বিদেশী নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ঢাকায় বিদেশী দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সরিয়ে নেয়ার জন্য ঢাকা বিমানবন্দরের রানওয়ে মেরামত ও আন্তর্জাতিক বিমান অবতরণের সুযোগ দেয়া হয়। এ জন্য বিমানবন্দরে বিমান হামলা বন্ধ রাখে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও মিত্রবাহিনী।
নিউজওয়ান২৪.কম/এমজেড
- ভাষা আন্দোলনের আদ্যেপান্ত
- মহান বিজয় দিবস আজ
- সেনা কল্যাণ সংস্থার শিক্ষামূলক বৃত্তির চেক পেল ২৯৩ শিক্ষার্থী
- বারবার ধর্ষন করা হয়েছে: সুকির দেশ থেকে পালিয়ে আসা নারীদের আর্তনাদ
- ‘বাড়াবাড়ি করছে, দিছি...সরাইয়া’
- পিলখানা হত্যাকাণ্ড: বিজিবির সব ইউনিট শাহাদাত বার্ষিকী পালন করবে
- ট্রেনের টিকিট কাটতে লাগবে এনআইডি নম্বর
- সেনাকল্যাণের ৪৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দরবার অনুষ্ঠিত
- কুয়েতের সঙ্গে তিনটি নয়, চারটি চুক্তি স্বাক্ষর
- খালেদার আপিল শুনানির সময় ইসিতে যা ঘটেছে
- পাকিস্তানি স্কুলের মতে ‘পাঞ্জাবি অশ্লীল ভাষা’!
- আসল নকল থেকে সাবধান: ভয়াবহ বিপদ ঘটে যেতে পারে!
- অনিরুদ্ধ অপহৃত নাকি আত্মগোপনে!
- বাংলাদেশের রাজনৈতিক জরিপ ও সত্য-মিথ্যা
- ২১ ফেব্রুয়ারি
মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ